কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড বাংলাদেশের কসমেটিকস ও ট্রয়লেট্রিজ জগতে অন্যতম জনপ্রিয় এবং স্বনামধন্য একটি কোম্পানি। দেশীয় কোম্পানিটি ২০০০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সাথে ব্যবসা করলেও এই শিল্পে ধীরে ধীরে তার মার্কেট শেয়ার এবং গ্রহণযোগ্যতা হারাতে থাকে।

স্থানীয় বিপণন এবং পণ্য স্বল্পতার কারণে ২০১৬ সাল পর্যন্ত কোম্পানিটির লোকাল বিক্রয়ের পরিমাণ ছিলো বেশ অসন্তোষজনক। কোম্পানিটিকে ঘুরে দাঁড়ানোর ইচ্ছে থেকে কোম্পানির চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠান, এম পি সোয়েটার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম মিরাজ হোসেনকে ২০১৭ সালে কেয়া কসমেটিকসের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। কেয়া কসমেটিকসের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পটা শুরু এখান থেকেই।

এম মিরাজ হোসেন পরিচালক হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই প্রথমে কোম্পানিটির বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানদের সাথে আলোচনায় বসেন এবং তাদেরকে নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের মার্কেটগুলোতে চষে বেড়ান। তিনি কোম্পানির দুর্বলতার জায়গাগুলো সনাক্ত করেন এবং বিষয়গুলি সংশোধন করতে শুরু করেন। শুরু হয় দৃশ্যপটের পরিবর্তন। তিনি কোম্পানির বিদ্যমান ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রিসোর্স প্র্যাকটিস, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাইলে ইতিবাচক পরিবর্তন আনেন।

ক্রমাগত কোম্পানির লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে বরাবরের মত এম মিরাজ হোসেন নিজেকে সফল সংগঠক হিসেবে প্রমাণ করেন। এর আগে ২০০৮ সালে তিনি বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক সর্বকনিষ্ঠ সিআইপি হিসেবে ভূষিত হন।

এছাড়াও জনাব মিরাজ হোসেন জাতিসংঘের প্রকল্প পরিচালক হিসেবে এক বছর কানাডাতে যুক্ত ছিলেন। অতীতের দুর্বলতা কাটিয়ে বর্তমানে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড এখন পুরোদমে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমানে কেয়া কসমেটিকসের শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে। এখন দেশজুড়ে এর প্রায় ৪০০ এর অধিক ডিস্ট্রিবিউটর রয়েছে যা ২০১৭ সালের আগে ছিলো মাত্র ২৫০। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে কোম্পানিটি যুক্ত হয়েছে স্বপ্ন, আগোরা এবং ল্যাভেন্ডার এর মত জনপ্রিয় সুপার শপগুলোর সাথে। কেয়া কসমেটিকস ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, Pinterest, ইউটিউব সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইন মার্কেটপ্লেসে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে।

প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারা, সমন্বয়হীনতার অভাব, পণ্যের পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য না থাকা এবং পণ্যের ডেলিভারিতে অনিয়মের কারণে কোম্পানিটি তার আগের অবস্থান হারিয়ে ফেলে বলে মনে করা হয়। এম মিরাজ হোসেন সেই বিষয়গুলির সমাধান করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এবং নতুন নীতি ও কৌশল প্রয়োগ করার মাধ্যমে কোম্পানিকে প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন।

সূত্রঃ মানবজমিন

1 thought on “এম মিরাজ হোসেন, কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডের ঘুরে দাঁড়ানোর অন্যতম কৌশলী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *